রবিবার ২৫ মে ২০২৫ - ১৩:১৮
যুব প্রজন্মের সঙ্গে হাওযা ইলমিয়ার যোগাযোগে রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তা

যুব প্রজন্মের সঙ্গে হাওযা ইলমিয়ার যোগাযোগে রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তা

 ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতার নির্দেশনার ভিত্তিতে

হাওযার পরিচালক ও শিক্ষকদের উচিত আশাবাদী ও ভবিষ্যতমুখী দৃষ্টিকোণ নিয়ে যুব সমাজের প্রশ্ন ও উদ্বেগগুলো চিহ্নিত করে শিক্ষাপদ্ধতি ও গঠন কাঠামোকে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী রূপান্তর করা।

হাওযা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, হাওযা ইলমিয়া খোরাসান-এর নারী শাখার গবেষণা বিভাগের প্রধান সাইয়্যেদা আযম আলতেফাতি বলেছেন: সর্বোচ্চ নেতার হাওযাগুলোর প্রতি প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ হলো—যুব সমাজের প্রতি আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি ও সক্রিয় যোগাযোগ। হাওযার পরিচালক ও শিক্ষকদের উচিত আশাবাদী ও ভবিষ্যতমুখী দৃষ্টিকোণ নিয়ে যুব সমাজের প্রশ্ন ও উদ্বেগগুলো চিহ্নিত করে শিক্ষাপদ্ধতি ও গঠন কাঠামোকে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী রূপান্তর করা।

তিনি মাশহাদে হাওযা নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, সর্বোচ্চ নেতার হাওযা ক্বোম-এর প্রতিষ্ঠার শতবার্ষিকীতে দেয়া বার্তাটি হাওযার পরিচালকদের নতুন করে অধ্যয়ন করা উচিত। বার্তাটির অন্যতম মূল দিক ছিল যুব সমাজের সঙ্গে গভীর ও কার্যকর সংযোগ গড়ে তোলার আহ্বান।

তিনি যোগ করেন: এই বার্তায় সর্বোচ্চ নেতার প্রধান সুপারিশ ছিল—যুব সমাজের প্রতি ইতিবাচক ও আশাব্যঞ্জক মনোভাব এবং তাদের সঙ্গে সক্রিয় যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তা। তিনি বারবার বলেছেন, হাওযাগুলোর উচিত সমকালীন সামাজিক বাস্তবতার জ্ঞানসহ ইতিবাচক ও বিশ্বাসঘন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে যুবদের নৈতিক গঠনে আত্মনিয়োগ করা, যেন তারা নিজেদের হাওযার অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করে।

তিনি আরও বলেন: আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বারবার সতর্ক করেছেন, যুব সমাজ যদি প্রকৃত ধর্মীয় পরিবেশ ও হাওযা ইলমিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, তা হবে বিপজ্জনক। এ জন্যই হাওযার দায়িত্বশীলদের উচিত, যুবদের মানসিকতা, উদ্বেগ ও মূল্যবোধ চিহ্নিত করে তাদের সঙ্গে ভবিষ্যতমুখী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সম্পর্ক গড়ে তোলা। এই মনোভাব যুব সমাজের সুপ্ত ও অন্তর্নিহিত সামর্থ্যে বিশ্বাস এবং দেশের সর্বাঙ্গীন উন্নয়নে তাদের ভূমিকার প্রতি আস্থার প্রকাশ।

হাওযা শিক্ষাব্যবস্থায় কাঠামোগত ও বিষয়বস্তুর রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তা

আলতেফাতি বলেন, সামাজিক চাহিদা ও ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনার পরিবর্তনের ফলে হাওযার কৌশলগত ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার কাঠামো ও প্রক্রিয়ার সংস্কার অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন: আজকের দিনে প্রথাগত ও পুরনো শিক্ষাদান পদ্ধতির মাধ্যমে আর যুবকদের জটিল প্রশ্ন ও উদ্বেগের জবাব দেয়া সম্ভব নয়। এজন্য পাঠ্যবিষয় হালনাগাদ, দক্ষতা বৃদ্ধির ওয়ার্কশপ, আধুনিক পাঠদানের পদ্ধতির প্রয়োগ ও যুগোপযোগী কর্মসূচি প্রণয়ন অপরিহার্য।

তিনি আরও বলেন: হাওযার পরিচালকদের উচিত এমন ব্যবস্থা করা যাতে তরুণ ছাত্ররা শুধু গভীর ধর্মীয় জ্ঞানেই নয়, সমস্যার সমাধান, সমালোচনামূলক চিন্তা ও সামাজিক বিশ্লেষণের দক্ষতাও অর্জন করতে পারে। শিক্ষাব্যবস্থা যতটা বাস্তবমুখী ও নমনীয় হবে, ততই এমন একটি প্রজন্ম তৈরি হবে যারা সমাজের প্রতিক্রিয়া দিতে প্রস্তুত থাকবে এবং পড়াশোনা শেষে যুব সমাজের সঙ্গে কার্যকর ও দ্বিমুখী সম্পর্ক বজায় রাখতে পারবে।

যুব সমাজের বিশ্বাসগত ও সামাজিক প্রশ্নের পুঙ্খানুপুঙ্খ জবাব দেয়ার জন্য তালীমপ্রাপ্ত ও দক্ষ আলেম তৈরি জরুরি

আলতেফাতি বলেন: হাওযা পরিচালকদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো—ছাত্রদের এভাবে গড়ে তোলা যাতে তারা যুব সমাজের প্রশ্ন, সংশয় ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম হয়।
তিনি ব্যাখ্যা করেন:
আজকের যুব সমাজ দ্রুতগতির তথ্যপ্রযুক্তি পরিবেশে প্রচুর তথ্য ও কাঁচা ডেটার মুখোমুখি হয়। এতে নতুন নতুন প্রশ্ন ও সংশয় দেখা দেয়। এগুলোর যথাযথ উত্তর না পেলে মানসিক ও চিন্তাগত ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।

তিনি বলেন: হাওযার ছাত্রদের এমনভাবে গড়ে তোলা উচিত যেন তারা যুক্তিসংগত বিশ্লেষণ, আত্মবিশ্বাস, দক্ষ যোগাযোগ এবং গভীর চিন্তন ক্ষমতা অর্জন করে সমাজে ইতিবাচক দিকনির্দেশনা দিতে পারে।

এজন্য ব্যবহারিক অনুশীলন, মাঠপর্যায়ের পরীক্ষণ এবং বিশেষায়িত ওয়ার্কশপ ও গোলটেবিল আলোচনায় অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করা জরুরি।
ছাত্রদের নতুন সংস্কৃতি ও চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে সচেতন করা, বিশ্বাস ও সামাজিক সংশয়সমূহের উত্তর দেয়া এবং মুক্তচিন্তা ও প্রশ্ন করার পরিবেশ তৈরি করা হাওযার ছাত্রদের এমন এক অবস্থানে নিয়ে যাবে, যেখানে তারা যুব সমাজের চিন্তা ও আত্মিক নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha